যেভাবে হবে একজন প্রফেশনাল ছাপড়ি, ফুল গাইডলাইনস নিচে তুলে ধরা হল। হ্যালো আমার ফেসবুক ফ্যামিলি, ইনস্টা ফ্রেন্ডস, আর টিকটক ফলোয়ার্স! বন্ধুরা, জীবনে কিছু হতে চাও? ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বা সফল মানুষ? আরে ছাড়েন তো, এত কষ্ট করে কী হবে! আসুন আমরা একটু স্মার্ট হই, ট্রেন্ডের সঙ্গে গা ভাসাই, আর হয়ে উঠি একজন প্রফেশনাল ছাপড়ি। কীভাবে? এই দেখো আমার স্টেপ-বাই-স্টেপ মাস্টারক্লাস, একদম ফ্রি-তে দিচ্ছি। চলো শুরু করি। ০১) ট্রেন্ডে গা ভাসাও, মাথা খাটানো বন্ধ করো। দেখো ব্রো, সবাই যখন 'মর্নিং রুটিন' ভিডিও বানাচ্ছে, তুমিও বিছানায় শুয়ে একটা সেলফি তুলে ক্যাপশন দাও 'ওয়েকিং আপ লাইক আ কিং' যদিও ঘুম থেকে উঠছো দুপুর ২টায়। কেউ যখন ট্রাভেল পোস্ট করছে 'মাউন্টেন কলিং', তুমি ছাদে দাঁড়িয়ে একটা ফটো তুলে লিখো 'নেচার ইজ মাই হোম'। ইউনিক কিছু ভাবার চেষ্টা করলে মাথা ধরে যাবে, সবাই জীবলি বানাচ্ছে তুমি ঘুবলি বানাও ট্রেন্ড যা বলে, চোখ বন্ধ করে কপি করো। ছাপড়ি মানেই তো কপিবাজ 'ক্রিয়েটিভিটি? কীসের জন্য হ্যাঁ! ০২) ২৪ ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ থাকো, সিক্রেট বলে কিছু নেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলানোর ছবি দিয়ে লিখো গুড মর্নিং ওয়ার্ল্ড। দুপুরে মায়ের হাতের ডাল-ভাতের প্লেট তুলে ক্যাপশন ফাইভ-স্টার লাঞ্চ। বিকেলে চায়ের কাপ হাতে ধরে স্টোরি দাও টি টাইম ইজ মি টাইম। এমনকি রাতে টয়লেটে বসে পোস্ট করো থিঙ্কিং অ্যাবাউট লাইফ। কিছুই লুকিয়ে রাখার দরকার নেই, তোমার ফ্রেন্ডলিস্ট তো জানতে চায় না তুমি কখনো পড়তে বসছো কি না, তাই না? ছাপড়ির জীবন মানেই ওপেন বই, পড়তে না পারলেও ফটো তো তুলতেই পারো! নিজের মাঝে একদম সিক্রেট কিছু রাখার প্রয়োজন নেই সব প্রকাশ করো। ???? ০৩) কাজ নেই, স্কিল নেই, শুধু রিলস আর আফসোস। দিনে ১২ ঘণ্টা ফোন ঘেঁটে কুকুরের লাফানো, বিড়ালের হাই তুলে ঘুমানো, আর ফানি প্র্যাঙ্ক' ভিডিও দেখো। কেউ কিছু বললে কিছু শিখতে হবে না? তাকে বলো, লাইফই আমার স্কুল, ব্রো!তারপর ফেসবুকে কেউ গাড়ি কেনার পোস্ট দিলে কমেন্ট করো আমারও হবে একদিন, আর ভেতরে ভেতরে হিংসায় জ্বলে যাও। সফল মানুষ দেখে আফসোস করো, আর ভাবো ওর বাপের টাকা আছে, আমার কী আছে? ছাপড়ির আসল শক্তি এখানেই কিছু না করে সবার উপর রাগ! পরিশ্রম করার প্রয়োজন নেই আফসোসেই আসল শক্তি। ০৪) মেয়ে হলে শালিনতা ছুঁড়ে ফেলো, ওড়না টাটা-বাই-বাই। বোনেরা, শালীন পোশাক পড়ে কী হবে? শরীর ঢাকা থাকলেও বুকটা একটু দেখাতেই হবে এটাই তো মডার্ন ছাপড়ি স্টাইল। পর্দা, বোরখা, হিজাব, আর ওড়না? ওটা তো গ্রামের মেয়েদের জন্য। রাস্তায় বের হও ওড়না ছাড়া, চুল উড়িয়ে সেলফি তুলে পোস্ট করো। ছেলেরা লাইক মারবে, কমেন্টে হট লিখবে এটাই তো তোমার আসল সফলতা। আর তাছাড়া ছেলেরা তো চাইই তোমার শরীরের আকর্ষণীয় পার্ট দেখতে তুমি না হয় ফ্রীতে তা দেখিয়ে দিলে। আর কেউ সমালোচনা করলে বলো 'হিংসুটে লোকের কথায় আমি কান দিই না। ছাপড়ি কুইনের জয় হোক! ০৫) ছেলে হলে ইভটিজিং-এর পিএইচডি করো।ভাইয়েরা, রাস্তায় মেয়ে দেখলেই চোখ মেরে কী খবর, সুন্দরী?' বলো। বাসে উঠে ইচ্ছাকৃতভাবে ধা ক্কা দাও, তারপর হাসি দিয়ে বলো সরি, ভুল হয়ে গেছে। সম্মান দেওয়ার ঝামেলায় যেও না, ওটা বোরিং লোকদের কাজ। মনে মনে প্রতিটা মেয়েকে বি ছানায় কল্পনা করো, আর ফেসবুকে পোস্ট দাও আমি সত্যিকারের রোমান্টিক ছেলে, সিঙ্গেল মেয়েরা নকমি, মেয়েরা আমার ভালোবাসা বোঝে না'। কেউ ঝগড়া করতে এলে বলো 'তোরা হিংসা করিস আমার স্টাইল দেখে'। ছাপড়ি ব্রো-কোডের গর্ব থাকতে হবে! তো, ???? বন্ধুরা, এই পাঁচটা স্টেপ ফলো করলেই তুমি একজন প্রফেশনাল ছাপড়ি হতে পারবে পিংকি প্রমিস। পোস্টটা ভালো লাগলে লাইক দাও, শেয়ার করো, আর কমেন্টে লিখো ব্রো, তুমি আমার গুরু। ছাপড়ি লাইফ জিন্দাবাদ!