Life Line
Public | 29-May-2025

সংসার জীবন সুখী করার জন্য স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব কি?

সংসার জীবন মানেই কেবল ছাদ, দেয়াল ও গৃহসজ্জা নয়। বরং এটি হল ভালোবাসা, দায়িত্ব, ত্যাগ ও মমতার এক অদৃশ্য বন্ধন। স্বামী ও স্ত্রী এই দুটি সম্পর্কের মাঝেই গড়ে ওঠে একটি পূর্ণাঙ্গ পরিবার। কিন্তু এই সম্পর্ক যদি দায়িত্ববোধ, সম্মান এবং ভালোবাসায় না গড়া হয়, তবে সংসার শুধু একটি দায় হয়ে ওঠে। আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল সমাজে, যেখানে প্রযুক্তি আমাদের কাছে সময় কমিয়ে দিয়েছে, সেখানে পারিবারিক বন্ধন রক্ষা করা এবং সংসার জীবন সুখময় করা আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। তাই স্বামী ও স্ত্রীর একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া এই যুগে আরও গুরুত্বপূর্ণ। স্ত্রীর প্রতি স্বামীর দায়িত্ব। ✒ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাঃ- একজন স্বামীর প্রধান দায়িত্ব স্ত্রীকে ভালোবাসা ও সম্মান করা। কেবল আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়া নয়, মানসিক সঙ্গ, সহানুভূতি এবং যত্নও আবশ্যক। নবী করিম (সাঃ) বলেছেন... ❝তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণ করে।❞ তাই একজন মুসলিম পুরুষের উচিত তার স্ত্রীকে সবসময় সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে দেখা। ✒ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাঃ- একজন স্বামীর কর্তব্য হলো পরিবারকে যথাযথ ভরণপোষণ দেওয়া। যদিও বর্তমান যুগে অনেক নারীও কর্মজীবী, তবু স্বামীর মৌলিক দায়িত্ব থেকে যায় সংসারের খরচ চালানো। ✒ সহযোগিতা ও সহনশীলতাঃ- সংসার পরিচালনা শুধু স্ত্রীর একার দায়িত্ব নয়। রান্না, সন্তান পালন কিংবা বাজার করা। এসব ক্ষেত্রেও স্বামীকে সহযোগিতা করতে হবে। এই ছোট ছোট সহানুভূতির কাজগুলোই পারস্পরিক ভালোবাসা বাড়ায়। ✒ বিশ্বাস স্থাপন ও রক্ষাঃ- স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ নয়, বরং বিশ্বাস স্থাপন করা জরুরি। বিশ্বাসহীন দাম্পত্য জীবনে কখনও শান্তি আসে না। স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্ব। ✒ সম্মান ও আনুগত্যঃ- একজন স্ত্রী তার স্বামীকে সম্মান করবে, তাকে ছোট করে কথা বলবে না বা অসম্মান করবে না। ঘরের বাইরে স্বামীর সম্মান রক্ষা করাও স্ত্রীর দায়িত্ব। ইসলামে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর আনুগত্যকে জান্নাতের চাবিকাঠি বলা হয়েছে। ✒ দায়িত্বশীলতা ও যত্নঃ- সংসার পরিচালনায়, সন্তানের লালনপালনে ও পরিবেশকে আনন্দময় রাখতে স্ত্রীর ভূমিকা অপরিহার্য। একজন সচেতন ও দায়িত্বশীল স্ত্রী-ই পারে একটি ঘরকে স্বর্গ বানাতে। ✒ আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বুদ্ধিমত্তাঃ- পরিবারের আয় কম হোক বা বেশি, একজন স্ত্রীর উচিত সেটাকে বুঝে চলা। অপ্রয়োজনীয় খরচ না করে প্রয়োজনীয় সঞ্চয় ও ব্যয়বন্টন করে স্বামীকে সহায়তা করা সংসার রক্ষার এক গুরুত্বপূর্ণ দিক। ✒ ভালোবাসা ও মানসিক সঙ্গঃ- স্বামী ঘরে ফিরে মানসিক প্রশান্তি খুঁজে পায় স্ত্রীর মুখে। তাই একজন স্ত্রীর দায়িত্ব, সে যেন নিজের আচরণে, কথাবার্তায় ও ব্যবহারিক দিক থেকে স্বামীর ক্লান্তি দূর করে তার পাশে থাকে। ✒ পারস্পরিক দায়িত্ববোধঃ- সুখী দাম্পত্যের মূল ভিত্তি। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কেবল অধিকার ও কর্তব্যের সম্পর্ক নয়, বরং এটি হলো পারস্পরিক বন্ধন ও বোঝাপড়ার সম্পর্ক। এখানে আমি নয়, “আমরা” গুরুত্বপূর্ণ। ছোট ছোট ভুলে ক্ষমা করা, একে অপরের দোষ না খোঁজা বরং গঠনমূলক আলোচনা করা—এইসব মানবিক গুণগুলো সংসারকে টিকিয়ে রাখে। সন্তানদের সামনে যদি স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে সম্মান দেয়, সন্তানরাও তা শিখে। ✒ সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিকতাঃ- বর্তমানে অনেক সংসার ভাঙছে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝির কারণে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অতিরিক্ত ব্যস্ততা কিংবা বাইরের প্রলোভনে সম্পর্ক দুর্বল হচ্ছে। এই বাস্তবতায় আমাদের ফিরতে হবে পারস্পরিক বোঝাপড়ার জায়গায়। আত্মমর্যাদা রক্ষা করে কিভাবে দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া যায় তা শিখতে হবে। উপসংহারঃ- সংসার জীবন শুধু থাকা নয়, এটি একসাথে থাকার আনন্দ। স্বামী ও স্ত্রী যদি একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল হন, তবে কোনো ঝড়-ঝাপটা সংসারকে নত করতে পারে না। ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, ক্ষমাশীলতা ও পারস্পরিক সহানুভূতিই হল সুখী সংসারের ভিত্তি। আসুন, আমরা প্রত্যেকে নিজের জায়গা থেকে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আমাদের সংসারকে করি ভালোবাসায় পূর্ণ, নিরাপদ এবং সুখময়।
Follow Us Google News
View (706) | Like (0) | Comments (0)
Like Comment
Comment Box
Sponsor

For Ads

+01828-684595

www.fewlook.com

Fewlook is a world wide social media platform

Install FewLook Android Application

PlayStore Free Download Available

Install Now