Reality
Public | 27-May-2025

আমরা চোখে যা দেখি, তা সত্যিনাও হতে পারে!

এটা কোনো এডিট করা কিংবা ফটোশপড ছবি না। ছবিটিতে প্রথম পলকেই যা দেখছেন, তাও সত্যিনা। ছবিটা একটা বিভ্রম। কোনো পাথর এখানে শুণ্যে ভাসছেনা। বরং পাথরের কিছু অংশ পানিতে ডুবে আছে। এটাই সত্য যে - আমরা চোখে যা দেখি, তা যেমন সবসময়ই সত্য নয় । ঠিক তেমনি আমার হাত দিয়ে যা স্পর্শ করি, সেটাও অনেক সময় বিভ্রম। আমরা মাথার উপর আকাশ দেখি বলেই আকাশকে উপরের দিকে এবং পৃথিবীকে নিচে বলে মনে করি। অথচ সত্যি হলো... বাস্তবে কোন উপর বা নিচ নেই। আকাশ পৃথিবীকে চারদিকে ঘিরে রেখেছে। আমরা যাকে অ্যান্টার্কটিকের হিমশীতলতা বলে মনে করি। তা আসলে মহাকাশের গভীর শীতলতার তুলনায় উত্তপ্ত এক অগ্নিসাগর। আমরা আমাদের চোখে সূর্যকে প্রতিদিন পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে দেখি। অথচ বাস্তব সত্য সম্পূর্ণ এর বিপরীত। পৃথিবীই সূর্যের চারপাশে ঘোরে। ঠিক তেমনি, আমরা আকাশে চাঁদকে বৃহত্তম গ্রহ উপগ্রহ হিসেবে দেখি। অথচ এটি আসলে সবচেয়ে ছোট গ্রহ। আমরা লোহাকে স্পর্শ করলে অনুভব করি এটি একটি ইনটেগ্রেটেড সলিড পদার্থ। অথচ বাস্তবে এটি এক ধরনের ক্ষুদ্র কণার সমষ্টি ছাড়া আর কিছুই নয়। এই কণাগুলো শুধুমাত্র একটা শূন্যস্থানকে পূর্ণ করে রাখে। আর প্রতিটি কণার মধ্যে তফাত প্রায় ততটুকু, যতটুকু আকাশের নক্ষত্রের মধ্যে। বিজ্ঞানীরা তাই মনে করেন। আমরা যা কঠিন এবং একত্রিত মনে করি, তা আসলে কণার মধ্যে বৈদ্যুতিক চুম্বকীয় আকর্ষণ শক্তির ফল। আমরা আসলে লোহার পরিবর্তে এক কণা সমূহের পারষ্পরিক আকর্ষণ শক্তিটাকেই আঙুল দিয়ে অনুভব করি। রঙের জগৎটা আরো বেশি ইল্যুশন। গোটা দুনিয়ার রঙের ভুবন-আলোর রিফ্লেকশান। আলোও নাই, রঙ ও নাই। অন্ধ চোখে তাই কোনো রঙ নাই। যে চুম্বনকে আমরা ভালোবাসার প্রতীক বলে ভাবি- তা শারীরিক হরমোনের খেলা। ইতিহাসতো আরো বেশি জটিল এবং বিভ্রম। ঐতিহাসিক সত্য হলো:- ইতিহাসবিদরা প্রতিটি যুগে যারা ক্ষমতার পাদপ্রদীপের আলোয় থাকেন, তাদের কলমে সেই শক্তিশালী মানুষদের কথাই লিখেন। সেজন্য আফ্রিকান প্রবাদে বলা হয়! যতদিন পর্যন্ত হরিণ লিখতে জানবেনা, ততদিন পর্যন্ত ইতিহাসে শিকারীকেই গৌরবান্বিত করা হবে। বৃটিশ বই পুস্তকে লর্ড ক্লাইভ তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হিরো। উমাইয়া যুগে ইয়াজিদের চেয়ে বড় বীর আর নেই। শত দেশকে কলোনি বানিয়ে সম্পদ লুঠে রাণী হলেন মহারাণী ভিক্টোরিয়া। আদিবাসী আমেরিকানরা কলম্বাসকে জলে ভাসা অবস্থায় আবিষ্কার করলো। সেই কলম্বাসই তাদের মারলো, লুঠ করলো, দাস বানালো এবং আমেরিকা আবিষ্কারক হিসাবে ইতিহাসে নাম লেখালো। ইতিহাস কি অদ্ভূত!! ইতিহাস কি বিভ্রম! সংবাদপত্র যাকে বীরপুরুষ বলে ধারণা দেয়া হয়- হতে পারে সে একজন কাপুরুষ। কোনো প্রেমিক হতে পারে বড় প্রতারক। যে সবচেয়ে দানবীর সেই হতে পারে আত্মীয় স্বজনের সম্পদ লুণ্ঠনকারী। এই লেখার শেষ পর্যায়ে এসে জানলাম-স্নেহময়ী সন্তানই মা হন্তাকারী। হয়তোবা হতে পারে, নেপথ্যে অন্য কেউ। দৃশ্যমান ঘটনার অন্তরালে লুকিয়ে থাকতে পারে অন্য কারো দুরভিসন্ধি। আর যে কোনো খ্যাতি, মোহ , প্রতিপত্তির অন্তরালে রয়ে যায় - সেই হয়তোবা হতে পারে কোনো অভাগা, কোনো এতিম, কোনো দুঃস্থ, কোনো পীড়িতের আশা-ভরসার বাতিঘর। তাই সত্য বড় কঠিন। সঠিক সত্য জানা আরো বেশি কঠিন। সেজন্য যে কোনো কিছু বাহ্যিকভাবে বিচার করে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো তাই বড়ই শিশুসুলভ আচরণ। ব্রেণের অনুরণনে যেটা আছে সেটা অনেকেই মুখের ভাষায় প্রকাশ করেনা। কারণ-মুখের ভাষা আর চিন্তার ভাষা একনা। কোনো অব্যক্ত হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা মর্মস্পর্শী অনুভূতি অনুধাবনের চেয়ে মহাকাশের কোনো গভীরে একটি তারকায় পৌঁছানোও অনেক সহজ। কে বলতে পারে, আমি সব সত্যটা বুঝে ফেলেছি? কে সাহস করে দাবি করতে পারে, আমি নিজেকে জানি? এটাই একমাত্র সত্য যে, আমরা সবকিছুই জানি না। এমনকি আমাদের কানে যা শুনে এবং চোখে যা দেখে তাও না। আমাদের অজ্ঞতার কারণেই... প্রত্যেক দল তার নিজস্ব মতামত নিয়ে গর্বিত হয়। এবং মনে করে তার মতামতই সঠিক। সেই একমাত্র সত্য। আমরা কবে জানব যে- যা আমরা জানি, তা আসলে কিছুই জানি না। যদি আমরা আমাদের অজ্ঞতা উপলব্ধি করতে পারতাম এবং আমাদের সীমাবদ্ধতা মেনে নিতাম। তবে আমাদের হৃদয়ে দয়া এবং ভালোবাসার দরজা খুলে যেতো। এবং পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ তখন সহমর্মিতার সিম্ফনিতে, ভালোবাসার অনুরণনে, সৌহার্দ্যের বন্ধনে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে পারতো। ছবি কৃতজ্ঞতাঃ ডেভিড এ্যাটেনবরো।
Follow Us Google News
View (797) | Like (0) | Comments (0)
Like Comment
Comment Box
Sponsor

For Ads

+01828-684595

www.fewlook.com

Fewlook is a world wide social media platform

Install FewLook Android Application

PlayStore Free Download Available

Install Now