ডিভোর্সের আগে শ্বশুর বাড়ি জেলখানা মনে হতো, ডিভোর্সের পরে এখন নিজের বাড়িই দোজখের মত লাগছে। (নাম না প্রকাশে এক ডিভোর্সি নারীর কথা।) পরিস্থিতি যেমনই হোক, ডিভোর্স কখনো সুখ দেয় না!! কমপক্ষে কোন মেয়ে সুখী হতে পারে না। এক ডিভোর্সি নারীর বাস্তব জীবনী? জানিনা, আমি কেন লিখছি। হয়তো এজন্য কারণ আমি চাই আর কেউ আমার মতো ভুল না করুক। হয়তো এজন্য কারণ আমি চাই ঠুনকো কারণে সংসারগুলো ভেঙে না পড়ুক। আমি ঊনিশ বছর বয়সী একজন নারী। আমাদের বিয়ে হয়েছিল আমার পছন্দে। সংসারও টিকে ছিল দেড় বছর। আমাদের একটা ছেলেও আছে, ওর বয়স এক বছর। আমার স্বামীর স্বভাব-চরিত্র সবই বেশ ভালোই ছিল। শুধু একটু জেদি । অবশ্য তাও সবসময় না, মাঝে মধ্যে। মানুষ ভাবে ওর বদ জেদের জন্যই বুঝি আজ এই অবস্থা, কিন্তু আমি জানি, আমাদের সমস্যার শুরুটা ওর দিক থেকে হয় নি। সব সংসারেই তো টুকটাক কিছু সমস্যা থাকে। ওরকম আমাদের মধ্যেও মাঝে মাঝে ঝগড়া-ঝাটি হতো। কিন্তু ঝগড়া বাধলেই আমি তল্পিতল্পা গুছিয়ে বাপের বাড়ির দিকে হাঁটা দিতাম। বাপের বাড়িতে বোনরাও আসতো, আর ভাইরা তো ছিলই। ওদের কাছে কেঁদেকেঁটে সব বলতাম। তখন সবাই ওকে ফোন করে বেশি কথা শোনাত। আমার ছোট বোন তো রীতিমত অপমান করত! আমার কাছেও মনে হতো, ঠিকই আছে। কত বড় সাহস, আমার সাথে লাগতে আসে। আমাকে নিজের মতো চালাতে চায়। আমার মধ্যে কেমন একটা জেদ কাজ করতো। ওর কাছে ছোট হব, ওর কাছে নিজের ভুল স্বীকার করব, মাফ চাইব, এটা ভাবতেই পারতাম না। উল্টো বড় গলা করে বলতাম, “ডিভোর্স দাও!তোমার মতো লোকের সাথে কে সংসার করে?” তবে, ডিভোর্স আমি কখনোই মন থেকে চাইনি। ওটা ছিল মুখের কথা। ওর সামনে ছোট হওয়ার চাইতে ডিভোর্স চাওয়াই আমার কাছে সঠিক মনে হতো। একদিনের কথা এখনও মনে পড়ে। সেদিন ছোট একটা ব্যাপার নিয়ে তর্ক করতে করতে দুজনেই খুব উত্তেজিত হয়ে পড়েছি। রাগে আমার শরীর কাঁপছে। যা মুখে আসছে তাই বলছি। তুই-তোকারি, গালিগালাজ, অপমান কিচ্ছু বাদ যায়নি। এক পর্যায়ে সহ্যের বাঁধ ভেঙে ও আমার গায়ে হাত তুললো! এর আগে কিংবা পরে কখনোই ও আমার গায়ে হাত তুলেনি। কিন্তু ঐ একটা থাপ্পড়, ওটাই যথেষ্ট ছিল। আমি বাপের বাড়ি চলে গেলাম। আর হ্যাঁ বরাবরের মতো এবারও আমি নিজের দোষের দিকটা না বলে খালি ওর দিকটাই বলে গেলাম। মানুষের দোষ দিয়ে আর কী লাভ! সবাইকে যা বলেছি, সেটার উপর ভিত্তি করেই তারা বিচার করেছে। পরিবারের সবাই বললো, এমন ছেলের সাথে সংসার করার কোনো দরকার নাই। মামলা ঠুকে দাও। আমি সবার পরামর্শে মামলা করলাম। ওর নামে নারী নির্যাতনের কেইস করা হল। খুব দ্রুতই ওকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল। ওর পরিবার থেকে মুরুব্বিরা এসে বার বার অনুরোধ করল, আমি যেন এই কেইস তুলে নিই। ভেতরে ভেতরে আমিও চিন্তা করতাম, আচ্ছা, আমার স্বামী কি আসলেই জালেম? ও কি কোনদিন নিজে থেকে আমার গায়ে হাত তুলেছে? আমি যদি ওকে এত খারাপ কথা না শোনাতাম, তাহলে কি ও আমার গায়ে সেদিন হাত তুলতো? আমার বাবা মা আমাকে বুঝিয়েছিল, আমি যদি এতকিছুর পর ফিরে যাই, তাহলে ও ভাববে, আমি বুঝি অসহায়। আমাকে আরো পেয়ে বসবে। আমার উপর ইচ্ছামত ছড়ি ঘুরাবে। একবার গায়ে হাত তুলেছে মানে বার বার একই কাজ করবে। কাজেই নিজে থেকে ফিরে যাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। কিন্তু আমার মনের ভেতর কে যেন চিৎকার করে বলতো, ও তো এমন লোক না। তবে ও যেদিন আমার গায়ে হাত তুলেছিল, সেদিনই হাত জোড় করে আমার কাছে মাফ চেয়েছিল। এসব ভেবে ভেবে আমি মামলা তুলে নিলাম। তবে ওর কাছে ফেরত গেলাম না। কিছুদিন পর দুই পরিবার থেকে বিচার-সালিশ হল। সবার কাছে ও দোষী প্রমাণিত হল। সবাই ওকে নানা কথা বোঝাল, উপদেশ দিল। তারপর আবার সংসার শুরু করলাম। এর পরের কয়েক মাস ভালোই চলছিল, কিন্তু হুট করে আবার কী একটা নিয়ে আমাদের ঝগড়া বেধে গেল। ব্যস, কাপড় চোপড় গুছিয়ে আবার আমি বাপের বাড়ি গিয়ে উঠলাম। এর মধ্যে শুনলাম ও নাকি খুব অসুস্থ ! আমি বাসায় ফিরতে চাইলে আমার পরিবার বললো, এভাবে একটা ঝগড়ার পর একা একা ফিরলে সেটা ভালো দেখায় না। আর আমার বোনদের কথা ছিল, ওসব অসুস্থ-টসুস্থ কিছু না, সব বাহানা! আমরা চাচ্ছিলাম ঐ পক্ষ থেকে কিছু আত্মীয়-স্বজন এসে ওর ভুল স্বীকার করে আমাকে হাতেপায়ে ধরে নিয়ে যাক। কিন্তু এবার কেউই আসলো না। এরও কিছুদিন পর ও আমাকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিল। ডিভোর্স লেটার দেখে আমাদের পরিবারের সবাই খুব খেপে গেল। কতবড় সাহস, মেয়েকে এত কষ্টে রেখেছে, তার উপর ডিভোর্স লেটার পাঠায়। সবার কথায় আমার কাছেও মনে হলো, ঠিকই তো, কত বড় সাহস! আমাকে ডিভোর্স দিতে চায়? ওর সব ভুলগুলো চোখের উপর ভাসতে লাগলো। মা বাবা মনে করিয়ে দিলো, ও হলো সেই ছেলে যে কিনা আমার গায়েও হাত তুলেছে। প্রতিশোধের আগুনে জ্বলতে জ্বলতে আমিও ঠিক করলাম, এবার ডিভোর্সই দেব। কে চায় এমন ফালতু লোকের সংসার করতে? কোর্টে গিয়েও ওকে হেনস্থা করার চেষ্টা করলাম। আমার মাসিক খরচ বাড়িয়ে একটা আকাশ ছোঁয়া অংক দাবি করলাম! আমি চাচ্ছিলাম ওর যেন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। যেন নিজে থেকে আমার কাছে এসে আবার সংসার করতে চায়। আসলে ডিভোর্স হোক আমি কখনোই চাই নি৷ কিন্তু জিদ আমাকে খেয়ে নিচ্ছিল। আগ বাড়িয়ে ওকে ডিভোর্স তুলে নিতে বলা আমার পক্ষে অসম্ভব! ওর কাছে ছোট হওয়া আমি মানতেই পারি নি। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার, ও আমার আকাশ ছোঁয়া সমস্ত দাবি মেনে নিলো। আমাদের ছেলেকে আমি পেয়ে গেলাম। ভরণপোষণ, মাসিক খরচ, ওর সম্পত্তি সব! বিনিময়ে ও পেলো শুধু ডিভোর্স। আমাদের ডিভোর্স হয়েছে আজ সাড়ে তিন বছর। ও আবারও বিয়ে করেছে। সুখেই আছে বোঝা যায়। আসলে ওর মতো নির্ঝঞ্ঝাট স্বামীকে নিয়ে মেয়েরা হয়তো সুখেই থাকবে। এখন আমার নিজের কথা ভেবে আফসোস হয়। মানুষের মুখের কথা কখনো কখনো ছুরির চেয়েও ধারালো হতে পারে। ও আমাকে একবার থাপ্পড় মেরেছিল ঠিকই, কিন্তু আমি কথার তীরে ওকে ছিন্ন-বিছিন্ন করে ফেলতাম। শারীরিক নির্যাতন করিনি সত্যি, কিন্তু মানসিকভাবে কষ্ট দিতাম। এসব কথা আমার মা বাবাকে কখনোই বলা হয় নি। নিজের দোষের কথা মানুষ কতটাই বা বলে! মাঝে মাঝে ভাবি, ইশ, আমার পরিবার যদি একটু নিজে থেকে বুঝে আমাকে সংসার করার উপদেশ দিতো। যখন আমি ওর কাছে ফিরে যেতে চাইতাম, তখন ওর খারাপটা না বলে যদি একটু ভালো দিকগুলোর কথা মনে করাতো! আমি যদি নিজের জিদ নিয়ে পড়ে না থেকে, একটু ওর কাছে নত হতাম! তাহলে হয়তো আজ আমাকে এই দিন দেখা লাগতো না। ডিভোর্সের আগে শ্বশুর বাড়ি জেলখানা মনে হতো, ডিভোর্সের পরে এখন নিজের বাড়িই দোজখের মত লাগছে। আজ আমার ভাইবোন বন্ধুবান্ধব সবার নিজেদের সংসার আছ কিন্তু ছোট্ট ভুলে সব শেষ হয়ে গেছে। তাই দোয়া করি আর কারো সাথে যেন এমন না হয়।
কিভাবে বুঝবেন যে, একটি ছেলে সত্যিই আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসে কিনা তাই নিচে দ (Read More)
View (106,398) | Like (0) | Comments (0)ডিভোর্সের দুই বছর পর প্রাক্তন স্ত্রীর বাড়িতে গেলাম।উদ্দেশ্য ছিলো ছেলেকে ন (Read More)
View (9,829) | Like (1) | Comments (0)শুধুমাত্র "ক" বর্ণ ব্যবহার করে একটি দীর্ঘ অনুচ্ছেদ: কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী (Read More)
View (40,460) | Like (0) | Comments (0)২৭ বছর বয়সে যখন হন্যে হয়ে ব্যাংকে চাকরি খুঁজছেন, তখন আপনারই বয়েসি কেউ একজন স (Read More)
View (25,791) | Like (2) | Comments (0)শোন বান্ধবী! স্বামীর সাথে ঝগড়া হলে কখনো তর্ক করবি না। সরিও বলবি না। ভ্রু কু (Read More)
View (61,300) | Like (1) | Comments (0)বিয়ের পরে যদি কোন মেয়ে সুন্দর থেকে আরও সুন্দর হয় তার পিছনের কৃতিত্ব সম্পূর্ (Read More)
View (32,524) | Like (2) | Comments (0)বাঁশ কাকে বলে? কত প্রকার কি কি? প্রত্যেক প্রকারের উদাহরণ সহ। একদিন এক বন্ধু (Read More)
View (10,183) | Like (3) | Comments (0)শাহরুখ খান তাঁর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন... আমি ৩০ বছর ধরে বিবাহিত। কিন্তু এখ (Read More)
View (9,089) | Like (1) | Comments (0)যে কারনে এই গরমে বিয়ে করা উচিৎ তাই নিচে দেওয়া হল। ১। দুজন দুই জায়গায় থাকার ক (Read More)
View (93,738) | Like (1) | Comments (0)সব পুরুষদের যে বিষয় গুলো জানা দরকার তা হল। যেদিন থেকে দেখবেন আপনার স্ত্ৰী অ (Read More)
View (105,083) | Like (1) | Comments (0)সবাই বলে ভালোবাসা সুন্দর! কিন্তু ভালোবাসা কোথায় সুন্দর সেটা কি জানেন? ভালো (Read More)
View (28,970) | Like (0) | Comments (0)একজন স্ত্রী শুধু সংসারের অংশীদার নন, তিনি স্বামীর জীবনের সবচেয়ে কাছের বন্ধ (Read More)
View (1,002) | Like (0) | Comments (0)কি একটা অদ্ভুত সময় পার করতেছি। নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কতশত কাজ করে ফেলতেছি। (Read More)
View (27,366) | Like (0) | Comments (0)চা বেচে অমুক দিনে ১০ হাজার কামাচ্ছে! বেগুনের খেত করে মাসে ২ লাখ টাকা ইনকাম! ৫ (Read More)
View (21,481) | Like (0) | Comments (0)বিবাহ বিচ্ছেদের চেয়েও ভয়ানক হলো নীরব বিচ্ছেদ। এটা এমন একটি অবস্থা যেখান (Read More)
View (1,759) | Like (0) | Comments (0)ছোট ছোট যে অভ্যাসগুলো আপনার জীবন বদলাতে পারে তাই নিচে দেওয়া হলো। ১/ প্রতিনি (Read More)
View (25,958) | Like (0) | Comments (0)আমরা সবাই সীমাবদ্ধতার মধ্যে বাস করি।কারণ আমরা মানুষ, ফেরেশতা নই। কেউ পুরোপ (Read More)
View (2,974) | Like (0) | Comments (0)আমার ছোট্ট জীবনে আমি শুধু চাইতাম কেউ আমাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসুক, যত্ন (Read More)
View (26,813) | Like (0) | Comments (0)এই মনোমুগ্ধকর স্থাপনাটি লিবিয়ার প্রাচীন শহর ঘাদামেসের। ঘাদামেসের মরুভূমি (Read More)
View (24,235) | Like (0) | Comments (0)Fewlook is a world wide social media platform